Header Ads

একটি শান্তিপূর্ণ গ্রামের গল্প

 

                            শান্তিপুর গ্রাম                               

একটি শান্তিপূর্ণ গ্রাম ছিল যেখানে সুরেলা পাখির গান আর নরম হাওয়ার ঝিরঝির শব্দ ছাড়া আর কোনো আওয়াজ শোনা যেত না। গ্রামের নাম ছিল শান্তিপুর। গ্রামের শেষপ্রান্তে একটি পুরনো, পরিত্যক্ত বাড়ি ছিল যেটা সবাই 'ভূতের বাড়ি' বলে ডাকত।



একদিন, গ্রামের কৌতূহলী যুবক রাজু ঠিক করল সে সেই বাড়ির রহস্য উদ্ঘাটন করবে। 


**রতন:** "এই রাজু, শুনেছিস? আজকে সন্ধ্যায় ভূতের বাড়ির সামনে নাকি একটা আলো দেখা গেছে!"


**রাজু:** "হ্যাঁ রে রতন, গ্রামবাসীরা বলছে বাড়িটা সত্যি ভূতের বাসা। আমি আজ রাতেই ওখানে যাচ্ছি।"


**রতন:** "তুই পাগল নাকি! ভূতের বাড়িতে যাস না, কিছু হয়ে যাবে তো!"



**রাজু:** "কিছু হবে না রতন। সত্যিটা জানতে হবে। তুই আমার সাথে চলবি?"


**রতন:** "না না, আমি এসবের ধারে কাছেও যাই না। কিন্তু তুই গেলে সাবধানে যাস। কিছু হলে চিৎকার করিস, আমি লোকজন নিয়ে আসব।"


সন্ধ্যার পর রাজু বাড়ির দিকে রওনা দিল। বাড়ির সামনে সে দেখল বাড়ির দরজা অর্ধেক খোলা।


**রতন:** "রাজু, তুই ঠিক করলি? এখনো সময় আছে ফিরে আসার।"


**রাজু:** "রতন, তুই বাড়ির বাইরে থাক। আমি ভেতরে যাচ্ছি।"


 ভেতরে ঢুকে সে দেখতে পেল ধূলোমাখা পুরনো আসবাবপত্র, জীর্ণ দেয়াল, আর এক কোণে একটা ভাঙা আয়না।

হঠাৎ রাজুর মনে হলো কেউ যেন তার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে। সে পেছনে ফিরে তাকাল, কিন্তু কাউকে দেখতে পেল না। তবে, রাজু স্পষ্ট অনুভব করল কারও উপস্থিতি। তার শরীরের লোম খাড়া হয়ে উঠল। রাজু সাহস করে আবার বাড়ির ভেতর ঢুকে পড়ল। এবার সে দেখতে পেল একটি মেয়ে, সাদা শাড়ি পরা, তাকে ঘুরে ঘুরে দেখছে।


মেয়েটি ধীরে ধীরে এগিয়ে এসে রাজুকে বলল, 


মেয়েটি,,"তুমি কেন এখানে এসেছ?" 


রাজু ভয় পেয়ে জিজ্ঞেস করল, "তুমি কে?" 


মেয়েটি দুঃখ ভরা কণ্ঠে বলল, 

মেয়েটি,,  "আমি রিয়া। আমি এই বাড়িতে অনেক বছর আগে মারা গিয়েছিলাম। আমার আত্মা এখানে বন্দি। আমাকে মুক্ত করো।"


রাজু ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে জিজ্ঞেস করল,


রাজু,,, "আমি কিভাবে তোমাকে মুক্ত করতে পারি?"  

রিয়া,,, "বাড়ির পেছনের বাগানে একটি পুরনো কুয়া আছে। সেই কুয়ার ভেতরে আমার লাশটি রয়েছে। তুমি যদি সেটি তুলে এনে গ্রামের মন্দিরে দাহ করো, তাহলে আমি মুক্তি পাব।"


**(কিছুক্ষণ পরে, রাজু ভেতর থেকে ফিরে এসে)**


**রতন:** "কিরে, তুই ঠিক আছিস তো? ভেতরে কি দেখলি?"


**রাজু:** "রতন, আমি একটা মেয়েকে দেখেছি। তার নাম রিয়া। ও বলছে ওর আত্মা এখানে বন্দি। ওকে মুক্ত করতে হবে।"


**রতন:** "কি বলছিস তুই! ভূতের সাথে কথা বলেছিস? আমি তো বিশ্বাস করতে পারছি না!"


**রাজু:** "হ্যাঁ রে, সত্যি। ওর লাশটা কুয়াতে আছে। আমাদের ওটা তুলে এনে দাহ করতে হবে।"


**রতন:** "আমি তোর সাথে আছি রাজু। আমরা একসাথে ওকে মুক্ত করব।"


রাজু সাহস সঞ্চয় করে কুয়ার দিকে রওনা দিল।


**রতন:** "এটা খুব গভীর মনে হচ্ছে। সাবধানে করিস।"


**রাজু:** "তুই আমার হাত ধর, আমি নিচে নামছি।"


 অনেক কষ্টে সে রিয়ার লাশ তুলে এনে মন্দিরে দাহ করল। সেই রাতেই রিয়ার আত্মা রাজুর সামনে এসে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলল, 


রিয়া ,,,"তোমার সাহসিকতা আর সাহায্যের জন্য আমি মুক্তি পেলাম। শান্তিপুর আবার শান্তিতে থাকুক।" 


এই বলে রিয়া অদৃশ্য হয়ে গেল। রাজু ধীরে ধীরে বাড়ির দিকে ফিরে আসল, আর গ্রামবাসীদের সব কিছু জানিয়ে দিল। তারপর থেকে সেই বাড়িতে আর কোনো ভূতের আতঙ্ক দেখা যায়নি, আর শান্তিপুর সত্যিকারের শান্তি ফিরে পেল।











No comments

Powered by Blogger.